প্রকাশিত: Wed, Mar 29, 2023 10:08 AM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 1:05 PM

হিরো আলমের মূল সমস্যা সে ‘কালো’ এবং তার মুখের ভাষা ‘গ্রাম্য’

ফাইজ তাইয়েব আহমেদহিরো আলমের মূল সমস্যা সে ‘কালো’ এবং তার মুখের ভাষা ‘গ্রাম্য’। মানে হচ্ছে, বর্ণে ও ভাষায় লোকটা অভিজাত সমাজে ভর্তি বিবেচ্য নয়। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট ভোগী এলিটদের ঘরে খাবারের এবং ব্যাংকে অর্থের যেহেতু সারপ্লাস, তাই তারা গরিবের ও গ্রাম্যদের পেটের দুর্ভিক্ষ দেখে না, দেখে রুচির দুর্ভিক্ষকে। হিরো আলমের দ্বিতীয় সমস্যা তার ফ্যান ফলোয়ার সংখ্যা, ডিজিটাল মিডিয়ায় আয়। ৫০ বছর ধরে আর্টিফিশিয়াল কালচারের বয়ান তৈরি করা এলিট যখন দেখে, তার বাজার নাই, তখন সে অভিজাত পাড়ার কিংবা অভিজাতের সন্তানদের  ভবিষ্যৎ সারপ্লাস নিয়ে চিন্তিত। রুচির দুর্ভিক্ষ মেটানোর চেষ্টা থাকলে অভিজাতের শিল্প চেষ্টা মফস্বলে যেতো। 

কিন্তু যেহেতু সে গ্রাম্যকে এলিট এক্সেস দিতে চায় না, তাই হিরো আমলের মুখে রবীন্দ্র সংগীত উঠায় ভ্রু কুঁচেক দেখে, কিন্তু গ্রাম্যরা কীভাবে সংগীত চর্চা করতে পারে তার জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ার চিন্তা করে না। তবে কথা আছে, এই একই অভিজাত কিন্তু গরিবের পেটের ক্ষুধা ও নীরব দুর্ভিক্ষ দেখতেন যদি তার চেতনার দল ক্ষমতার বাইরে থাকতো। এই একই অভিজাতদের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর আসরে গিয়ে গদগদ হতে দেখা যায়। চোরের মন্ত্রী হওয়ায়, লুটেরাদের ক্ষমতাসীন হওয়ায় অভিজাত সমাজের কারও বিবেকে বাধে না। ভাগ পেলে সেখানে নীরব থাকা যায়। মাহফুজুর রহমানের সংগীত অভিজাতের রুচির সংকট তৈরি করে না, সেটা আরাধনা। শাহেদদের সঙ্গে টক শোতে গিয়ে ফ্যা.সি.বা.দের বন্দনা করাও উন্নত রুচির পরিচয়। অভিজাতের রুচির দৌড়... সম্মতি উৎপাদন পর্যন্ত। যে সংস্কৃতিক এটাচমেন্ট তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যাংক ব্যালান্স স্বাস্থ্যবান রাখে, তাকে বিব্রত না করা তার সার্বক্ষনিক তৎপরতার অংশ। অর্থাৎ এলিটের  সারপ্লাস চলমান রাখতেই ক্ষুধার রাজ্যে রুচির অজুহাতের অবতারণা।

এর বাইরের বাস্তবতা হচ্ছে, দুর্বৃত্ত মাফিয়া, ব্যাংক লুট, ভোট চোরদের পা চাটা অভিজাতের ‘গণ’ সংশ্লিষ্টতাহীন রুচিকে সাধারণ মানুষ লাথি মেরেছে। মেধাহীনতা এবং চামচামীতে মাথা সপে দেওয়ার বিপরীতেই যে হিরো আলমদের উত্থান, এই কথাটা অভিজাত অপকটে স্বীকার করতে পারে না। চামচামির গভীরতা দেখি, যখন বলা হয় ‘মিডিয়া মুক্ত হওয়া নাকি রুচির দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে’। তো রুচির দুর্ভিক্ষ মেটাতে ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে, এইতো? নো ওয়ান্ডার, এই এলিটের দল কোনোদিনও ডিজিটাল কালো আইনের প্রতিবাদ করেনি। ফেসবুক থেকে